কুমিল্লায় মনোনয়নপত্র তোলা ব্যক্তির ওপর হামলা ছিল ‘সাজানো’-পুলিশ সুপার
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র নিয়ে ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সাবেক যুবলীগ কর্মী গোলাম সারোয়ার মজুমদার। ঘটনার একদিন বাদে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুরো ঘটনাটি ছিল সাজানো নাটক। গোলাম সারোয়ার নিজেই সেই নাটক সাজিয়েছেন।
শুক্রবার এই ঘটনার পর পরই শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান এই দাবি করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হচ্ছেন- কুমিল্লা নগরীর ছোটরা মফিজাবাদ কলোনির মো. সুমন, মো. সবির, মো. সবুজ, ইকবাল হোসেন ও মাসুদ রানা।
গোলাম সারোয়ার মজুমদার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ভাউপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আগে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তিনি কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসন থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।
কুমিল্লায় মনোনয়নপত্র তোলা ব্যক্তির ওপর হামলা ছিল ‘সাজানো’
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কার্যালয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সারোয়ার। তিনি সেখান থেকে বের হওয়ার পর ওই এলাকাতেই তার ওপর কথিত হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সারোয়ার নিজেই তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে আপলোড করেন।
তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ খুঁজছে কিন্তু তিনি এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সারোয়ার ও গ্রেপ্তার পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দুইদিন আগে সারোয়ার মফিজাবাদ কলোনিতে কথিত হামলাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে পুরো নাটকটি সাজান। হামলাকারীদের আগেই বলা দেওয়া হয়েছিল, কীভাবে হামলা করা হবে। খুব জোরে যেন মারধর করা না হয় সেটাও তিনি বলে দেন।
“ঘটনার ভিডিও করার জন্য মনোহরগঞ্জ থেকে সঙ্গে করে দুইজনকে নিয়ে আসেন তিনি। ঘটনার পরিকল্পনা যেখানে হয়েছে, সেই চা দোকানিকে আমরা পেয়েছি, তিনি সাক্ষ্য দিতে রাজি হয়েছেন।
কুমিল্লায় মনোনয়নপত্র তোলা ব্যক্তির ওপর হামলা ছিল ‘সাজানো’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, “সারোয়ারের মূল উদ্দেশ্য ছিল ওই আসনে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে বিতর্কিত করা। তারপরও সারোয়ারকে আটকের পর বলা যাবে, তার মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? এজন্য আমরা ঘটনাটি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কামরান হোসেন, জেলা ডিবির ওসি রাজেশ বড়ুয়া।