বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব -এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
মোঃ সাকিব মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের সুফল জনগণ পাচ্ছে বলেই সারাবিশ্ব যখন করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত তখন বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থায় আছে। কিন্তু বিএনপি সরকারের সাফল্য দেখেও না দেখার ভান করে সমালোচনা করে যাচ্ছে। যদিও তাদের বিরোধিতা জনগণ আমলে নিচ্ছে না।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৫ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সফলতা বিএনপি দেখে না। তারা শতভাগ বিদ্যুৎতায়নের সুফল দেখে না। ১৫ দিনের সাময়িক সমস্যাকে পুঁজি করতে চায় বলেই এদেশের জনগণ তাদের রাজনীতিকে বর্জন করেছে।
শনিবার দুপুরে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা মাঠে সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে আমাদের বিজয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল কিন্তু বাঙালি সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করেই স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা অর্জন করেছে। ৭৪ সালে জাহাজভর্তি খাদ্য সাহায্য ফিরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা শতভাগ ত্রুটিমুক্ত নয়। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থার দোষত্রুটি আমরাই সংশোধন করব জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কলুষিত করার জন্য আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিই দায়ী। তাছাড়া আদালতের রায়ে এ ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আর সুযোগ নেই উল্লেখ করে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা সরকারই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।সংবিধান অনুযায়ী পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে। তিনি লাকসাম মনোহরগন্জ্ঞে কাউকে লুটপাট, সন্ত্রাস ও কোনোপ্রকার অত্যাচার করার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ার করে দেন।’বর্তমানে আমাদেরকে গনতন্ত্রের সবক শেখানোর চেষ্টা চলছে’
বিএনপি সুশাসন কিভাবে দিবে সে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি সময়ে খাদ্য ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা হলে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী জবাব দিয়েছিলেন তাতে বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তি সহজ হয় আর আমার নেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, ভিক্ষুকের জাতি হওয়ার জন্য ৩০ লাখ লোক শহাদাৎ বরণ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে নি।
এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মনোহরগঞ্জে অতীতে এক কিলোমিটারও পাকা সড়ক ছিল না উল্লেখ করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসাবে এ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অবকাঠামোখাতের উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন যার সুফল স্থানীয় জনগণ পাচ্ছেন। তিনি বৃহত্তর কুমিল্লার উন্নয়নে ২৫০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, তাছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের অধীনে বিগত সময়ে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী মনোহরগঞ্জকে মাদক মুক্ত করার উদ্যোগ ঘোষণা করে বলেন, এতে ওয়ার্ড এর মেম্বার থেকে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারী কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ উদ্যোগে উপস্থিত সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মাস্টার আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.জাকির হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম কমল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও এলজিআরডি মন্ত্রীর উন্নয়ন সমন্বয়কারী মো.কামাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাস্টার সোলায়মান, জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট তানজিনা আক্তার, উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন, বাইঁশগাও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন, মনোহরগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন প্রমুখ। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।